কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ার পাহাড়ি এলাকায় ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপুর্ন

মোঃ আব্দুল কাইয়ুম,মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ
আখাউড়া-সিলেট রেলওয়ে সেকশনের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পাহাড়ি এলাকার মধ্যে দিয়ে চলাচলকারী ট্রেন ঝুঁিক নিয়ে চলাচল করছে। এ রেলপথে প্রায়ই বড় বড় গাছ পড়ে থাকায় এবং ভারী বৃষ্টিপাতে ভূমিধস ও রেলসেতু দেবে যাবার কারনে আন্তঃনগর ট্রেন ঘন্টার পর ঘন্টা বন্ধ থাকছে। এছাড়া পাহাড়ের ভিতরে রাতে ভারীবর্ষনে রেলপথ পিচ্ছিল হয়ে পড়ায় ট্রেন চলে ঝুঁিক নিয়ে। ৪/৫টি স্থানে টিলা উচুর ফলে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের উঠানামা করতে বেশ সমস্যা হয়। টিলা অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়ে ট্রেনগুলো পাহাড়ে আটকা পড়ে বলে শমসেরনগর স্টেশনমাস্টার আবদুল আজিজ জানান।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, সিলেট-আখাউড়া রেল পথে প্রতিদিন সকাল- রাত অবধি সিলেট থেকে ঢাকার পথে ১৪টি এর মধ্যে আর্ন্তঃনগর ৮টি ও লোকাল ৪টি যাতায়াত করে। অন্য দিকে চট্রগ্রাম রেলপথে ৬টি ট্রেন যাতায়াত করে। এর মধ্যে আন্তঃনগর ৪টি ও লোকাল ২টি ট্রেন। এই ১৬টি ট্রেনে প্রতিদিন প্রায় ১২ হাজার যাত্রী চলাচল করেন।
কমলগঞ্জের শমশেরনগর ও ভানুগাছ স্টেশন এবং রেলওয়ের শ্রীমঙ্গল গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল রাতে ঝড়ে উদ্যানের পাহাড়ি এলাকায় কয়েকটি স্থানে রেলপথের ওপর বড় গাছ ভেঙে পড়লে রাতে সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকাগামী আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন সারা রাত পাহাড়ে আটকে থাকে। পরদিন গাছ কেটে সরিয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। এর দুই দিন আগে ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি ঢলে উদ্যানের প্রবেশপথে জানকিছড়া রেলসেতুর পিলার দেবে গিয়ে ট্রেন চলাচল ১৯ ঘণ্টা বন্ধ থাকে।
গত ১২ মার্চ রাত ১১টায় সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে সার বহনকারী একটি ট্রেন দিনাজপুরের শিবপুর যাওয়ার পথে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পাহাড়ি এলাকার টিলা উঠতে না পেরে আটকা পড়ে। প্রায় এক ঘণ্টা পর আবারও ট্রেনটিকে পেছনের দিকে ফিরিয়ে এনে দ্রুতগতিতে উঠে টিলা অতিক্রম করে। পরদিন ১৩ মার্চ রোববার চট্টগ্রাম থেকে তেলবাহী ট্যাংকার নিয়ে একটি ট্রেন সিলেট যাওয়ার পথে পাহাড়ি এলাকার টিলা অতিক্রম করতে না পেরে পেছনে ফিরে যায়। প্রায় এক ঘণ্টা পর লাইনের ওপর বালু ছিটিয়ে পেছন থেকে দ্রুত গতিতে এসে ট্রেনটি টিলা অতিক্রম করে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা থেকে সার বহনকারী গাইবান্ধাগামী একটি ট্রেনকে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া ও হবিগঞ্জের রশিদপুর পাহাড়ি এলাকার টিলা পারাপারে সাহায্য করার পর কুশিয়ারা এক্সপ্রেসের যাত্রা বাতিল করা হয়েছিল।
কমলগঞ্জের শমশেরনগর স্টেশনমাস্টার আবদুল আজিজ বলেন, ভানুগাছ ও শ্রীমঙ্গল স্টেশনের মাঝামাঝি লাউয়াছড়া উদ্যানের পাহাড়ি এলাকায় চারটি স্থানের টিলা বেশ উঁচু। এসব টিলা অতিক্রম করতে যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেনের বেশ সমস্যা হয়। মাঝে মাঝে টিলা অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়ে ট্রেনগুলো পাহাড়ে আটকা পড়ে। ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝড় হলে ভূমিধস ও গাছ পড়েও রেলপথ বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টির দিনে উদ্যানের পাহাড়ি এলাকার রেলপথে ট্রেন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে।
শ্রীমঙ্গলে রেলওয়ের গণপূর্ত বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী আলী আজম বলেন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের পাহাড়ি এলাকার পথ পিচ্ছিল থাকায় ও ইঞ্জিন পুরোনো হয়ে যাওয়ায় সার ও তেলের ট্যাংকারবাহী ট্রেন পাহাড়ে মাঝে মাঝে আটকা পড়ে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে ৫ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যানের চারটি টিলা কাটার বিষয়ে রেলের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রেলপথের একেবারে কাছে থাকা বড় গাছগুলো কাটার ব্যাপারে বন বিভাগের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু অংশে গাছ কাটাও হয়েছে।
Related News

ঝিনাইদহে এক স্ত্রী দুই স্বামী!
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বৈডাঙ্গা গ্রামে প্রবাসী কবিরের স্ত্রী তহুরা (৫৫) তিনRead More

হয় বিয়ে, না হয় আত্মহত্যা!
তারেক জাহিদ, ঝিনাইদহ- ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক রাশেদ মন্ডলRead More
Comments are Closed