এবার মিস জাপান হলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রিয়াংকা

মিস ওয়ার্ল্ড জাপান-২০১৬ সুন্দরী প্রতিযোগিতার ‘মিস জাপান’ খেতাব অর্জন করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কন্যা প্রিয়াংকা ইউসিকা ঘোষ। গতবারের চ্যাম্পিয়ন এরিয়ানা মিয়ামুটোকে টপকে মিস জাপানের মুকুট পরেন ২২ বছর বয়সী আমাদের কন্যা প্রিয়াংকা। গত ৫ সেপ্টেম্বর টোকিও শহরে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ডিসেম্বর মাসে ওয়াশিংটনে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন তিনি।
প্রিয়াংকা ইউসিকা ঘোষের পূর্বপুরুষের বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মালিকান্দা গ্রামে। তিনি সম্ভ্রান্ত ঘোষ পরিবারের কন্যা। প্রিয়াংকার জন্ম জাপানে হলেও তাঁর বাবা অরুণ ঘোষের জন্ম ও বেড়ে ওঠা দোহারের মালিকান্দা গ্রামে।
পরিবারের দেওয়া তথ্য মতে, ১৯৮৫ সালের ২১ আগস্ট তাঁর বাবা অরুণ ঘোষ বাংলাদেশ থেকে জাপানে চলে যান। সেখানে গিয়ে কয়েক বছর পর জাপানি নারী নাউকোর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর পার্মানেন্ট রেসিডেন্সশিপ পেয়ে সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯৯৪ সালের ২০ জানুয়ারি অরুণ-নাউকো দম্পতির ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় একটি কন্যাসন্তান। পরিবারিক পদবির সঙ্গে মিলিয়ে তাঁর নাম রাখা হয় প্রিয়াংকা ইউসিকা ঘোষ।
পারিবারিক সূত্রে আরো জানা যায়, দোহারের মালিকান্দা গ্রামের বাড়িতে এখন প্রিয়াংকার দাদু অবনী মোহন ঘোষ ও ঠাকুমার সমাধি ছাড়া তেমন কিছু নেই। প্রিয়াংকার জেঠা অজয় ঘোষ ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তাঁর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। তিনি ঢাকা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন। বর্তমানে তিনি স্থায়ীভাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করছেন। সেই সূত্রে ঘোষ পরিবারের অধিকাংশ সদস্য সেখানেই বসবাস করে। প্রিয়াংকার বাবা অরুণ ঘোষ পরিবারের মেজো ছেলে। অজয়, অরুণ ও অমল ঘোষ তিন ভাই। এঁদের দাদু ডা. প্রফুল্ল ঘোষ ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী। তিনি একাধারে ১৯৪৭-৪৮, ১৯৬৭-৬৮ ও ১৯৭১ সালে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ড. প্রফুল্ল ঘোষের জন্মও দোহারের মালিকান্দা গ্রামে। তাঁর হাত ধরে মহাত্মা গান্ধী মালিকান্দা গ্রামে এসেছিলেন এবং একটি গান্ধী আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে বর্তমানে ভারতে বসবাস করা প্রিয়াংকার জেঠা অরুণ ঘোষের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্ম বাংলাদেশে। কাজেই বাংলাদেশ আমাদের পরিবারের শেকড়। একই সঙ্গে প্রিয়াংকার বাবার জন্মও বাংলাদেশে। কিন্তু প্রিয়াংকা বাংলাদেশের কথা তেমন কিছু বলতে পারবে না। আমার ভাই জাপানে এসে বিয়ের পর একবার বাংলাদেশে গিয়েছিল, তখন প্রিয়াংকা মায়ের গর্ভে ছিল। এরপরে আর যাওয়া হয়নি। প্রিয়াংকার শিক্ষাজীবনের কিছু সময় কেটেছে ভারতে। পশ্চিমবঙ্গের সুধীর মেমোরিয়াল স্কুলে স্ট্যান্ডার্ড টু ও থ্রি ক্লাসে দুই বছর পড়েছে। এরপর আমেরিকায় পড়াশোনা শেষ করে জাপানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে সে। জাপানে ফিরে মডেলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত আছে প্রিয়াংকা। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছর সে মিস জাপান নির্বাচিত হয়েছে। তার এ অর্জনে আমরা গর্বিত ও আনন্দিত।’
এ বিষয়ে প্রিয়াংকা ঘোষ ও তাঁর বাবা অরুণ ঘোষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর জেঠা অরুণ ঘোষ বলেন, ‘এমন সংবাদের পর থেকে আমরা সবাই উত্ফুল্ল। আমিও চেষ্টা করে ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।’
দোহারের মালিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘প্রিয়াংকাদের পুরো পরিবারের বাস ছিল মালিকান্দা গ্রামে। পরিবারটি শিক্ষাদীক্ষায়, সমাজকর্মে ছিল পরিপূর্ণ। আমাদের গ্রামের এ পরিবারের একটি মেয়ে আজ মিস জাপান নির্বাচিত হয়েছে, আমাদের ভালো লাগছে। আমরা ওকে নিয়ে গর্ব বোধ করি।’
উল্লেখ্য, ভারতীয় গণমাধ্যম গুলো প্রিয়াঙ্কাকে ভারতীয় বংশোদ্ভুত হিসেবে দাবি করে সংবাদ প্রকাশ করে।
Related News

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯ প্রদানে ভার্চুয়ালি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী
দেশের ৪৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯ প্রদানের আসর বসছে আগামীকাল রবিবার (১৭ জানুয়ারি)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাRead More

অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ-২০২০
দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ-২০২০। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের মূল আয়োজনেরRead More
Comments are Closed