News Bangla 24 BD | আরও ২ মামলায় খালেদাকে গ্রেফতারে পরোয়ানা
News Head

আরও ২ মামলায় খালেদাকে গ্রেফতারে পরোয়ানা


কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নোয়াবাজার এলাকায় বাসে পেট্রলবোমা হামলার মামলার পর আরও দুই মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এই নিয়ে তিন মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ( ১২ অক্টোবর) সকালে প্রথমে মানহানির অভিযোগে করা মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মহানগর হাকিম নূর নবী।

তার কিছু পরেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায়ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বিশেষ আদালতের বিচারক ড. আক্তারুজ্জামান। মানহানি মামলার বাদী এ বি সিদ্দিক এবং জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটি করে দুদক। ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি করা হয়। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।

সকালে চিকিৎসার জন্য বিদেশে থাকার কথা বলে অরফানেজ মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন পেছাতে ফের সময়ের আবেদন জানান তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। অন্যদিকে জামিন বাতিল করে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানান দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল।

আদালত আসামিপক্ষের আবেদন নামঞ্জুর করে খালেদার জামিনের পাশাপাশি আত্মপক্ষ সমর্থনও বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। একইসঙ্গে আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্য বাতিল করে আগামী ১৯ অক্টোবর মামলার সর্বশেষ ধাপ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন।

অন্যদিকে জাতীয় পতাকার অপমান নিয়ে করা মানহানি মামলায় গত ৫ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে ১২ অক্টোবর আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দিয়ে শেষবারের মতো সময় মঞ্জুর করেন আদালত। বৃহস্পতিবার তিনি আদালতে হাজির না হওয়ায় এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিক স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে একটি মানহানির মামলা করেন।

চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার পুলিশ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করে। মামলার অপর আসামি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যু হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গে জোট করে নির্বাচিত হয়ে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি রাজাকার-আলবদর নেতাকর্মীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকা তাদের বাড়িতে এবং গাড়িতে তুলে দেন।

জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ৭ নভেম্বর সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশে ফিরে এলে জিয়াউর রহমান তাকে হুমকি ও অবরুদ্ধ করে রাখেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া অভিযোগ করে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন দেশে যেন ফিরতে না পারেন সেই জন্য সরকার এভাবে একই দিনে দুইটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করিয়েছে।’

এর আগে, গত মঙ্গলবার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দুই বছর আগে বাসে পেট্রোল বোমা মেরে আটজনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলায় খালেদা জিয়াসহ ‘পলাতক’ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

দশম সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি কর্মসূচিতে বাধা পেয়ে বিএনপির ডাকা অবরোধ চলাকালে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় দগ্ধ হয়ে আটজনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান হাওলাদার বিএনপি-জামায়াতের ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন, যেখানে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫ থেকে ২০ জনকেও আসামি করা হয়। এই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে করা হয় হুকুমের আসামি। মামলার তদন্ত শেষে খালেদা জিয়াসহ মোট ৭৮ জনকে আসামি করে পুলিশ গত ৬ মার্চ কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিকে আক্রোশমূলক ও গভীর ষড়যন্ত্রমূলক বলে আখ্যা দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এ পরোয়ানার বিরুদ্ধে গত তিন দিন ধরে বিক্ষোভ করছে দলটি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ